ভারতে যানবাহনের ওপর বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। রিপোর্ট মারফৎ জানা যাচ্ছে যে, আগামী 2027 সাল থেকেই ভারতের বিভিন্ন শহরে ডিজেল চালিত যানবাহন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এই সুপারিশ এসেছে পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের তরফে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজার বেশ ভাল হারে বৃদ্ধি পাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাহলে চলুন জানা যাক কী কী সুপারিশ এসেছে সরকারের তরফে।
আসলে সরকার তাদের বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ইভির বিক্রয় বাড়াতে এবং সরকারের FAME স্কিম প্রচার করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী সময়ে নেট জিরো কার্বন নির্গমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্যই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শুধু গাড়িই নয়, সেইসাথে আরো নির্দেশ এসেছে যে, 2030 থেকে আর কোনো ডিজেল চালিত বাসও চালানো হবেনা। দেশজুড়ে যুক্ত হতে থাকবে ইলেকট্রিক বাসের বহর।
আসলে ডিজেল চালিত যানবাহন গুলি থেকে খুব বেশি পরিমাণে দূষণ ছড়াচ্ছে পরিবেশের অন্দরে। ডিজেল চালিত যানবাহনের থেকে যে ধোঁয়া বের হয় তা বাতাসের সংস্পর্শে মিশে দীর্ঘমেয়াদে ফুসফুসের সমস্যা থেকে হাঁপানির আক্রমণ এমনকী কখনো কখনো বয়সের আগেই মৃত্যুর জন্য দায়ী দীর্ঘস্থায়ী রোগেরও জন্ম দিতে পারে। এদিকে ভারতের বাজারে গাড়ির দুই-পঞ্চমাংশ জুড়ে রয়েছে ডিজেল। যার 80% খরচ হয় পরিবহনের কাজে। যাত্রীবাহী গাড়ির 40% ডিজেল দ্বারা চালিত হয়।
সরকারের তরফে বিভিন্ন নির্দেশ আসার কারণে এবং বিশ্বজুড়ে পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা বাড়ার পর থেকেই গাড়ি নির্মাণকারি বিভিন্ন কোম্পানি জ্বালানি চালিত গাড়ি থেকে সরে ইলেক্ট্রিক গাড়িতে স্যুইচ করছে। উল্লেখ্য যে, ভারতের বাজারে সবচেয়ে বড় গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থা মারুতি সুজুকি গত 2020 সালেই ডিজেল চালিত গাড়ি বন্ধ করেছে। সম্প্রতি Hyundai Motors ও সেডান সেগমেন্টে ডিজেল ইঞ্জিন বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
উল্লেখ্য যে, শুধু ভারত নয়, বিশ্বের আরো বিভিন্ন দেশ ডিজেল চালিত গাড়ি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী 2030 সাল থেকে পেট্রোল এবং ডিজেল, উভয় ধরনের জ্বালানি চালিত গাড়িই বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। ইউরোপীয় দেশ ফ্রান্স অবশ্য এই কাজে অনেকটাই পিছিয়ে। তারা 2040 থেকে জ্বালানি চালিত গাড়ি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের লক্ষ্য 2035 সাল।
এক্ষেত্রে দেখার বিষয় এটাই যে, পার্সোনাল গাড়ির ক্ষেত্রে ডিজেল চালিত গাড়ির সংখ্যা কম হলেও পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রায় 95% গাড়ি ডিজেল চালিত। এবার সেক্ষেত্রে এই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসা বেশ মুশকিল হতে চলেছে। তবে সময়ের মধ্যে ডিজেল চালিত গাড়িগুলোকে LPG অথবা CNG তে চালানো গেলেও অনেকটাই রক্ষা হয়। এখন দেখার সরকারের এই সুপারিশ কীভাবে এবং কতটা গুরুত্বের সাথে পালিত হয়।